কুমিল্লায় যুবলীগ নেতা হত্যা; সোহেল সিকদারের জামিন স্থগিত; আত্মসমর্পণের নির্দেশ

নিউজ ডেস্ক।।
বোরকা পরা তিন দুর্বৃত্তদের গুলিতে কুমিল্লার তিতাস উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক জামাল হোসেনকে (৪০) হত্যা মামলার আসামি মো. শাহীনুল ইসলাম ওরফে সোহেল সিকদারের জামিন স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগের চেম্বার জজ আদালত। একই সঙ্গে আগামী ২১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে আসামিকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

অন্যদিকে, হাইকোর্টে জামিন হওয়ার পর দ্রুত কীভাবে আদেশের কপি পৌঁছেছে সে বিষয়ে তদন্ত করার জন্য সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

বুধবার (১৩ সেপ্টেম্বর) আপিল বিভাগের বিচারপতি এম ইনাইদুর রহিমের চেম্বার জজ আদালত এ আদেশ দেন।

এর আগে আসামির জামিন স্থগিতের বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় জামিন বাতিল ও গ্রেফতারের আর্জি জানিয়ে আবেদন করা হয় বলে জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার মো. সারোয়ার হোসেন বাপ্পি। তিনি বলেন, এ সংক্রান্ত বিষয়ে আজ আপিল বিভাগের চেম্বার জজ আদালতে শুনানি হয়েছে।

এর আগে অবকাশের প্রথম দিন রোববার (৩ আগস্ট) হাইকোর্টের বিচারপতি ভীষ্মদেব চক্রবর্তী ও বিচারপতি শাহেদ নূর উদ্দিনের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ আসামির জামিন মঞ্জুর করে আদেশ দেন। অন্তর্বর্তীকালীন জামিন মঞ্জুরের পাশাপাশি তাকে কেন স্থায়ী জামিন দেওয়া হবে না সেই মর্মে চার সপ্তাহের রুল জারি করেন হাইকোর্ট।

যদিও ওই জামিন আবেদনের বিরোধিতা করেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী। উচ্চ আদালত জামিন আদেশে বলেছেন, মামলার সব বিষয়াদি বিবেচনা করে আমরা আসামিকে অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দিতে সম্মত হয়েছি।

জানা গেছে, যেদিন উচ্চ আদালতে জামিন মিলেছে সেদিনই জামিন আদেশ অস্বাভাবিক দ্রুত গতিতে পৌঁছেছে কুমিল্লার চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে। জামিন আদেশ পৌঁছানোর পরই দাখিল করা হয়েছে জামিননামা। জামিননামায় স্বাক্ষরের পর তা পৌঁছে কুমিল্লা কারাগারে। এরপরই বিকালে মুক্তি পান যুবলীগ নেতা জামাল হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি মো. শাহীনুল ইসলাম ওরফে সোহেল সিকদার। মুক্তির খবরেই আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন মামলার বাদী।

এদিকে, হাইকোর্টের জামিন আদেশ স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করেছে রাষ্ট্রপক্ষ। আবেদনে মুক্তি পাওয়া আসামিকে গ্রেপ্তারে আদালতের নির্দেশনা চাওয়া হয়।

ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট মো. সারওয়ার হোসেন বাপ্পী বলেন, ২০ দিনের মধ্যে তিনটি বেঞ্চে জামিনের চেষ্টা। এরমধ্যে দুটি বেঞ্চ জামিন দেয়নি। তবে অবকাশকালীন বেঞ্চ থেকে জামিন হাসিল করেছে আসামির আইনজীবী। তিনি বলেন, যে চতুরতার আশ্রয় নিয়ে জামিন আদেশ হাসিল করা হয়েছে তাতেই আমাদের আপত্তি। এছাড়া যে অস্বাভাবিক দ্রুততায় হাইকোর্টের জামিন আদেশ কারাগারে পৌঁছানো হয়েছে তাতে মনে হচ্ছে প্রতিটি জায়গায় লোক প্রস্তুত করা ছিল। যার কারণে জামিন হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই আসামি কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে গেলো

চলতি বছরের ৩০ এপ্রিল রাত ৮টার দিকে দাউদকান্দির গৌরীপুর পশ্চিম বাজার ঈদগাহ এলাকার মসজিদ গলিতে যুবলীগ নেতা জামাল হোসেনকে (৪০) গুলি করে হত্যা করে বোরকা পরা দুর্বৃত্তরা। তারা বাসার সামনে দাঁড়িয়ে থাকা যুবলীগ নেতা জামাল হোসেনকে পর পর তিনটি গুলি করে পালিয়ে যায়। জামাল হোসেন তিতাস উপজেলার জিয়ারকান্দি নোয়াগাঁও গ্রামের ফজলুল হকের ছেলে। তিনি গৌরীপুর পশ্চিম বাজার এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতেন।

এ হত্যাকাণ্ডের দুইদিন পর নয়জনের নাম উল্লেখ করে ১৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন নিহতের স্ত্রী পপি আক্তার। মামলায় এজাহারভুক্ত আসামিদের মধ্যে সোহেল অন্যতম। যিনি তিতাস উপজেলার আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান।

     আরো দেখুন:

পুরাতন খবর

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০  

You cannot copy content of this page